বন্ধুরা আমরা বাড়িতে লাইট টিভি ফ্রীজ ইত্যাদি চালায় সেই সব চালানোর জন্য কিন্তু ইলেকট্রিসিটির প্রয়োজন হয় । ইলেকট্রিসিটি অনেকভাবেই তৈরি করা যায় যেমন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র , হাওয়া কল্ ,সোলার পাওয়ার প্লান্ট ইত্যাদির সাথে সাথে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রিসিটি তৈরি করা হয় । আজ আমরা জানবো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিভাবে কাজ করে কিভাবে ইলেকট্রিসিটি তৈরি করে একটা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল মেকানিজম কি?
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট -পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে অনেকগুলি আলাদা আলাদা পার্টস রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আগে জেনে নেওয়া যাক । পারমাণবিক চুল্লির মূল হল কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং যেখানে পারমাণবিক চুল্লি রাখা হয় এটা 2 মিটার পুরু কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয় ।
কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং এর মধ্যে ক্যাল আদ্রিয়া নামক অনেক বড় ট্রাংক রয়েছে যার মধ্যে পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটে এবং এই বিক্রিয়ার জন্য যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয় সেটি হল ইউরেনিয়াম । এটি ছোট ছোট টুকরো করে মেটাল টিউবের মধ্যে রাখা হয় এবং এবং টিউব গুলোকে একসাথে গুচ্ছ করে বেঁধে সিল করে দেওয়া হয় যাতে ইউরেনিয়াম বাইরে না বের হতে পারে তার পরেই ব্যান্ডেল গুলিকে বড় ট্যাংকটার সিলিন্ডার এর মধ্যে প্রবেশ করানো হয় যার নাম প্যালিন্ডিয়া । এরমধ্যে নিউট্রন ও প্রবেশ করানো হয় । নিউট্রন কি কাজে লাগে সেটা আমি একটু পরে আলোচনা করব । এটি পারমাণবিক চুল্লির ক্যাল আদ্রিয়া কে হার্ড অফ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বলা হয় বা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হৃদয় বলা হয়।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়: এখানে দেখুন
প্রায় 200 বা তার বেশি ব্যান্ডেল ক্যাল আদ্রিয়া এর মধ্যে রাখা হয়। সেখানে একটি কন্ট্রোলিং ঘর থাকে যেটা উপর নিচ করে পারমাণবিক বিভাজনকে কন্ট্রোল করা হয় । ইংলিশে পারমাণবিক বিভাজন কে নিউক্লিয়ার ফিশন বলা হয়, নিউক্লিয়ার ফিউশন কিন্তু নয় ।নিউক্লিয়ার ফিউশন কিন্তু কেবলমাত্র সূর্যোদয় ঘটে আর এর ফলেই সূর্য আমাদের সব সময়ের জন্য আলো দেয় আর এই নিউক্লিয়ার ফিউশন এর জন্য প্রচুর পরিমাণ তাপের উৎপন্ন হয় ।
যখন একটি ইউরেনিয়াম পরমাণু ওপর একটি নিউট্রন পরমাণুর আঘাত করে তখন দুটি ইউরেনিয়াম এবং তিনটি নিউটনের উৎপন্ন হয় এরা ভাবী’ নতুন উৎপন্ন ইউরেনিয়াম এবং নিউট্রন আবার আঘাত করবে এবং আবার দুটি ইউরেনিয়াম এবং তিনটি প্রথম পরমাণু উৎপন্ন হবে আর এইরকম ভাবে আকারে পরপর চলতে থাকে ।আর এর ফলে প্রচুর পরিমান তাপ উৎপন্ন হয় । যদি কন্ট্রোল না করা যেত তাহলে বিশাল বড় একটা বিস্ফোরণ হত ।
পারমাণবিক বিভাজনের ফলে ক্যাল আদ্রিয়া বা সিলিন্ডার এর মধ্যে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়, এই সিলিন্ডারের ভেতর পাইপ রাখা হয় যার মধ্যে পানি থাকে তাপের ফলে এই পাইপের মধ্যে থাকা পানি প্রচুর গরম হয় এবং গরম হয়ে পাইপের মধ্যে দিয়ে নিচে থাকা একটি বয়লারের পানিকে গরম করে ।পাইপের মধ্যে হেভি ওয়াটার থাকে । হেভি ওয়াটার এর মানে হচ্ছে সাধারণ জলের থেকে অনেক ঘনত্ব বেশি এবং প্রায় 10 গুণ বেশি ভারী জল থাকে যেগুলো নদী সমুদ্র থেকে পাওয়া যায় । এই হেভি ওয়াটার পানি পাইপ এর মধ্য দিয়ে এসে বয়লারের সাধারণ পানিকে গরম করে এবং এখানে বাষ্প উৎপন্ন করে ।
বাষ্প এতটাই উৎপন্ন করে যে প্রচুর প্রেসারে বাষ্প পাইপের মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে বা পাইপের মধ্যে দিয়ে আছে এবং পাইপের মধ্যে দিয়ে বাষ্প এসে টারবাইন কে ঘোরাতে থাকে ফলে যখন টারবাইন ঘুরতে থাকে এবং জেনারেটর টারবাইন এর সাথে কানেক্ট করা থাকার কারণে জেনারেটর ঘুরতে থাকে পরিশেষে আমরা সকলেই জানি যদি জেনারেটর কোন কারনে ঘোরানো যায় তাহলে ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ তৈরি হয় । আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে কিভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে ইলেকট্রিসিটি বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়।