ট্রানজিস্টর কি ? ট্রানজিস্টর কত প্রকার? ট্রানজিস্টর এর কাজ কি ?

ট্রানজিস্টর একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা একটি ছোট সেমিকন্ডাক্টর উপাদান দিয়ে তৈরি। এটি সাধারণত সিগন্যাল এম্প্লিফাই (বর্ধিত) বা সুইচিংয়ের কাজ করে। ট্রানজিস্টরের তিনটি প্রধান অংশ থাকে: এমিটার, বেস, এবং কালেক্টর।

ট্রানজিস্টর কি ?

ট্রানজিস্টর কত প্রকার?

ট্রানজিস্টর এর কাজ কি ? 

ট্রানজিস্টর কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়?

কিভাবে বোঝা যাবে ডায়োডটি নষ্ট?

ট্রানজিস্টরের প্রকারভেদ:

ট্রানজিস্টর বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, তাদের গঠন, কার্যকারিতা এবং ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে। প্রধানত দুই ধরনের ট্রানজিস্টর আছে:

  1. বাইপোলার জাংশন ট্রানজিস্টর (Bipolar Junction Transistor – BJT):
    • PNP ট্রানজিস্টর: এতে একটি এন-টাইপ উপাদান দুটি পি-টাইপ উপাদানের মধ্যে থাকে।
    • NPN ট্রানজিস্টর: এতে একটি পি-টাইপ উপাদান দুটি এন-টাইপ উপাদানের মধ্যে থাকে।
  2. ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর (Field Effect Transistor – FET):
    • জাংশন ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর (JFET): এটি একটি সেমিকন্ডাক্টর চ্যানেলের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
    • মেটাল অক্সাইড সেমিকন্ডাক্টর ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর (MOSFET): এটি প্রধানত ডিজিটাল সার্কিটে ব্যবহৃত হয় এবং দুটি প্রধান প্রকার রয়েছে:
      • NMOS: এতে এন-টাইপ ক্যারিয়ার (ইলেকট্রন) দিয়ে কাজ করে।
      • PMOS: এতে পি-টাইপ ক্যারিয়ার (হোল) দিয়ে কাজ করে।

ট্রানজিস্টরের কাজ:

  1. অ্যাম্প্লিফায়ার (Amplifier): ট্রানজিস্টর একটি ছোট ইনপুট সংকেতকে বৃহত্তর আউটপুট সংকেতে পরিণত করতে পারে।
  2. সুইচ (Switch): ডিজিটাল সার্কিটে ট্রানজিস্টর সুইচের মতো কাজ করে। এটি অন এবং অফ অবস্থায় পরিবর্তন করতে পারে।
  3. অসিলেটর (Oscillator): ট্রানজিস্টর বিভিন্ন অসিলেটর সার্কিটে ব্যবহার করা হয়, যা নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে তরঙ্গ তৈরি করে।
  4. মডুলেটর (Modulator): ট্রানজিস্টর সংকেত মডুলেশনে ব্যবহার করা হয়, যা বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়।

ট্রানজিস্টরের ব্যবহার:

  1. অ্যামপ্লিফায়ার সার্কিট: অডিও এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি অ্যাম্প্লিফায়ারে ট্রানজিস্টর ব্যবহৃত হয়।
  2. ডিজিটাল সার্কিট: ট্রানজিস্টর ডিজিটাল লজিক গেট এবং মাইক্রোপ্রসেসরে ব্যবহার করা হয়।
  3. পাওয়ার রেগুলেটর: ট্রানজিস্টর বিভিন্ন পাওয়ার সাপ্লাই এবং ভোল্টেজ রেগুলেটর সার্কিটে ব্যবহৃত হয়।
  4. অটোমোবাইল ইলেকট্রনিক্স: গাড়ির বিভিন্ন ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল সিস্টেমে ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়।
  5. কমিউনিকেশন ডিভাইস: ট্রানজিস্টর বিভিন্ন রেডিও, টেলিভিশন এবং মোবাইল কমিউনিকেশন ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়।

কিভাবে বোঝা যাবে ডায়োডটি নষ্ট

ইলেকট্রনিক্স এর কাজ শিখতে গেলে কি কি কম্পোনেন্ট সম্পর্কে ভালোভাবে জানা লাগবে দেখুন:বিস্তারিত

ডায়োড নষ্ট হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য কিছু পরীক্ষার পদ্ধতি রয়েছে। এখানে কিছু সাধারণ পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হলো:

লক্ষণ:

  1. দৃশ্যমান ক্ষতি:
    • ডায়োডে যদি পুড়ে যাওয়া, ফেটে যাওয়া বা অন্য কোনও দৃশ্যমান ক্ষতি থাকে, তবে এটি সম্ভবত নষ্ট।
  2. ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ত্রুটি:
    • যদি কোনও ডিভাইস ঠিকমতো কাজ না করে বা অস্বাভাবিক আচরণ করে, তবে ডায়োড নষ্ট হতে পারে।

পরীক্ষার পদ্ধতি:

1. মাল্টিমিটার ব্যবহার:

ডায়োড টেস্ট মোড ব্যবহার করে:

  1. মাল্টিমিটারকে ডায়োড টেস্ট মোডে রাখুন।
  2. মাল্টিমিটারের লাল প্রোব অ্যানোডে এবং কালো প্রোব ক্যাথোডে সংযুক্ত করুন।
  3. একটি ভাল ডায়োড ফরোয়ার্ড পক্ষের দিক থেকে সামান্য ভোল্টেজ ড্রপ দেখাবে (সাধারণত 0.6V থেকে 0.7V একটি সিলিকন ডায়োডের জন্য)।
  4. প্রোবগুলির অবস্থান উল্টিয়ে নিন (লাল প্রোব ক্যাথোডে এবং কালো প্রোব অ্যানোডে)। একটি ভাল ডায়োড বিপরীত দিকে অসীম প্রতিরোধ দেখাবে।

রেজিস্ট্যান্স মোড ব্যবহার করে:

  1. মাল্টিমিটারকে রেজিস্ট্যান্স মোডে রাখুন।
  2. মাল্টিমিটারের লাল প্রোব অ্যানোডে এবং কালো প্রোব ক্যাথোডে সংযুক্ত করুন।
  3. ফরোয়ার্ড দিক থেকে কম রেজিস্ট্যান্স এবং বিপরীত দিক থেকে উচ্চ রেজিস্ট্যান্স (অসীম) দেখাবে একটি ভাল ডায়োড।

2. ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন:

ডায়োডটির ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন করুন এবং উপরে উল্লেখিত কোনও দৃশ্যমান ক্ষতির লক্ষণ আছে কিনা দেখুন।

3. অ্যাসিলোস্কোপ ব্যবহার:

যদি আপনার কাছে একটি অ্যাসিলোস্কোপ থাকে, তবে আপনি একটি DC উৎস এবং একটি রেজিস্টর ব্যবহার করে সার্কিট তৈরি করতে পারেন। ডায়োডের আউটপুট তরঙ্গ আকার পরীক্ষা করুন। একটি ভালো ডায়োড শুধুমাত্র একদিকে তরঙ্গ আকার দেখাবে।

রেজিস্টার এর মান বের করা শিখুন খুব সহজে:VIDEO

উপসংহার:

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে আপনি সহজেই ডায়োডের অবস্থা নির্ণয় করতে পারেন। যদি ডায়োড নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে এটি প্রতিস্থাপন করা উচিত যাতে আপনার সার্কিট বা ডিভাইস সঠিকভাবে কাজ করে।

related key:

ট্রানজিস্টর কিভাবে সুইচ হিসেবে কাজ করে
ট্রানজিস্টর কিভাবে এমপ্লিফায়ার হিসেবে কাজ করে
ট্রানজিস্টর pdf
ট্রানজিস্টর কি হিসেবে কাজ করে
বিবর্ধক হিসেবে ট্রানজিস্টর এর ব্যবহার
ট্রানজিস্টর কি বিবর্ধক হিসেবে কাজ করে
ট্রানজিস্টর এর প্রতীক
ট্রানজিস্টর কি দিয়ে তৈরি
ট্রানজিস্টর কি ?
ট্রানজিস্টর কত প্রকার?
ট্রানজিস্টর এর কাজ কি ?
ট্রানজিস্টর কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়?
কিভাবে বোঝা যাবে ডায়োডটি নষ্ট?

Leave a Comment